প্রবাসী আয়ের নতুন রেকর্ড: ২৬ দিনেই ২৯৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

প্রবাসী আয়ের নতুন রেকর্ড: ২৬ দিনেই ২৯৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

প্রবাসী আয়ের নতুন রেকর্ড ২৬ দিনেই ২৯৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

বাংলাদেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) আবারও নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনেই রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৯৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশী মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) এই পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে আসছে প্রায় ১১.৩৪ কোটি ডলার বা ১৩৮৪ কোটি টাকা।

ঈদের প্রভাব ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণ

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, নতুন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বৈধ পথে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পেছনে মূলত কয়েকটি কারণ কাজ করছে:

- **হুন্ডি ও অর্থপাচার কমেছে**: 

সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপের ফলে অবৈধ পথে টাকা পাঠানোর হার হ্রাস পেয়েছে।

- **ব্যাংকে আকর্ষণীয় ডলারের দাম**: এখন প্রবাসীরা খোলাবাজারের তুলনামূলক ভালো রেট ব্যাংকের মাধ্যমেই পাচ্ছেন, যা রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

**ঈদ উপলক্ষে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি**: প্রবাসীরা পরিবার-পরিজনদের জন্য বাড়তি অর্থ পাঠাচ্ছেন, যা মার্চ মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহকে ত্বরান্বিত করেছে।

পূর্ববর্তী মাসগুলোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ

গত বছরের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যা এতদিন পর্যন্ত দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছিল। এছাড়া, ফেব্রুয়ারি মাসেও ২৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম আট মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১৮৪৯ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের (২০২৩-২৪) একই সময়ের তুলনায় ৩৫৫ কোটি ডলার বেশি।

**মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহ:**

**জুলাই:** ১৯১.৩৭ কোটি ডলার

- **আগস্ট:** ২২২.১৩ কোটি ডলার

- **সেপ্টেম্বর:** ২৪০.৪১ কোটি ডলার

- **অক্টোবর:** ২৩৯.৫০ কোটি ডলার

- **নভেম্বর:** ২২০ কোটি ডলার

- **ডিসেম্বর:** ২৬৪ কোটি ডলার (সর্বোচ্চ)

- **জানুয়ারি:** ২১৯ কোটি ডলার

- **ফেব্রুয়ারি:** ২৫৩ কোটি ডলার

রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ইতিবাচক প্রভাব

এই উচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি, সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও এটি ভূমিকা রাখছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের সঠিক নীতিমালা ও প্রবাসীদের জন্য আরও সুবিধাজনক ব্যাংকিং ব্যবস্থার ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ আগামীতেও বৃদ্ধি পাবে।

উপসংহার

প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। বর্তমান রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও স্থিতিশীল হবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।

✅সংবাদ আরো পেতে আমাদের ওয়েবসাইট প্রবেশ করুন। 


Next Post Previous Post