প্রানঘাতি লিভার রোগের কারণ, লক্ষণ ও পরীক্ষা কি?
প্রানঘাতি লিভার রোগের কারণ, লক্ষণ ও পরীক্ষা কি?
লিভার রোগের কারণ:
লিভার আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পাদন করে। তবে বিভিন্ন কারণে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিছু প্রধান কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
1. ভাইরাল সংক্রমণ: হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি-এর মতো ভাইরাসজনিত সংক্রমণ লিভার রোগের প্রধান কারণ।
2. অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন: দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত মদ্যপান লিভারের সিরোসিস সৃষ্টি করতে পারে।
3. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত চর্বি ও ফাস্টফুড খেলে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
4. ওষুধ ও টক্সিন: কিছু ওষুধ ও রাসায়নিক পদার্থ লিভারের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
5. অতিরিক্ত ওজন ও ডায়াবেটিস: স্থূলতা এবং ডায়াবেটিস লিভার ফ্যাট জমার প্রধান কারণ হতে পারে।
6. জেনেটিক কারণ: বংশগতভাবে লিভারের রোগ হবার আশঙ্কা থাকতে পারে।
লিভার রোগের লক্ষণ:
লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যা নির্ণয় করা জরুরি।
1. Cronic ক্লান্তি: লিভার রোগের কারণে সবসময় অবসাদ ও দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে।
2. ত্বকের হলদে ভাব (Jaundice): লিভার ভালোভাবে বিলিরুবিন প্রসেস করতে না পারলে ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায়।
3. বমি ও ক্ষুধামন্দা: লিভারের সমস্যা থাকলে খাওয়ার ইচ্ছা কমে যেতে পারে এবং বমি বমি ভাব থাকতে পারে।
4. পেট ফাঁপা ও ব্যথা: লিভারের সমস্যার কারণে পেটে পানি জমতে পারে এবং ফাঁপা অনুভূত হতে পারে।
5. গা চুলকানো: লিভারের কার্যক্ষমতা কমে গেলে শরীরে টক্সিন জমে গিয়ে ত্বকে চুলকানি দেখা দিতে পারে।
6. বদহজম ও গ্যাসের সমস্যা: লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে হজমে সমস্যা হতে পারে।
7. গা ও পা ফোলা: লিভার দুর্বল হলে শরীরে তরল জমে গা ও পা ফুলে যেতে পারে।
লিভার সুস্থ রাখার উপায়:
1. স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং ফাস্টফুড পরিহার করুন।
2. অ্যালকোহল পান এড়িয়ে চলুন।
3. নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
4. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
5. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
6. ভাইরাল হেপাটাইটিস প্রতিরোধের জন্য টিকা নিন।
7. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন।
লিভার রোগের কারণ ও লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। যদি উপরের লক্ষণগুলোর মধ্যে কোনোটি দেখা যায়, তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। লিভার সুস্থ রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা অপরিহার্য।
লিভার রোগের পরীক্ষা ও ফলাফল:
লিভার রোগ সনাক্ত করতে বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। নিচে কিছু প্রধান লিভার টেস্ট এবং সম্ভাব্য ফলাফল উল্লেখ করা হলো:
1. লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT):
SGPT (ALT) এবং SGOT (AST) লেভেল বৃদ্ধি পেলে লিভার ড্যামেজের সম্ভাবনা থাকে।
বিলিরুবিন লেভেল বৃদ্ধি পেলে জন্ডিসের ইঙ্গিত দেয়।
অ্যালবুমিন লেভেল কমে গেলে লিভার সমস্যা বোঝায়।
2. হেপাটাইটিস বি ও সি টেস্ট:
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়।
3. আল্ট্রাসাউন্ড ও সোনোগ্রাফি:
লিভারের আকার, ফ্যাট জমার পরিমাণ ও সিরোসিস শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়।
4. সিটি স্ক্যান ও এমআরআই:
লিভারের টিউমার, সিরোসিস বা অন্য কোনো জটিলতা পরীক্ষা করা হয়।
5. বায়োপসি:
লিভারের টিস্যু নমুনা সংগ্রহ করে লিভার রোগের ধরণ এবং স্টেজ নির্ধারণ করা হয়।
লিভার সুস্থ রাখার উপায়:
1. স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং ফাস্টফুড পরিহার করুন।
2. অ্যালকোহল পান এড়িয়ে চলুন।
3. নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
4. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
5. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
6. ভাইরাল হেপাটাইটিস প্রতিরোধের জন্য টিকা নিন।
7. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন।
উপসংহার:
লিভার রোগের কারণ, লক্ষণ এবং পরীক্ষার বিষয়ে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। যদি উপরের লক্ষণগুলোর মধ্যে কোনোটি দেখা যায়, তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। লিভার সুস্থ রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা অপরিহার্য।
✅স্বাস্থ্য ও চিকিতসা বিষয়ে আরো সংবাদ পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।